স্বামীর জন্য হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার এক অনবদ্য ইতিহাস-শেষ রক্ষা হলোনা

অনলাইন ডেস্ক

ভারতজুড়ে এখন অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। হাসপাতালে, রাস্তায়, বাড়িতে অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। স্বজনদের কোনো চেষ্টাই কাজে লাগছে না। বাঁচানো যাচ্ছে না মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, স্বামী বা সন্তানকে। স্বজনদের বুক খালি করে প্রিয় মানুষরা চলে যাচ্ছেন না ফেরার দেশে। একটুখানি অক্সিজেন যে বেঁচে থাকার জন্য কতটা প্রয়োজন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সবাই।

সম্প্রতি আগরার একটি ছবি চোখে পানি এনে দিয়েছে। স্ত্রীর সব চেষ্টা ব্যর্থ করে স্বামীর মৃত্যু যেন চারদিকে হাহাকার ছড়িয়েছে। রেনু সিংঘালের স্বামী রবি সিংঘাল করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তার নিজেরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন স্বামীকে বাঁচাতে।

চোখের সামনে স্বামীর দম বন্ধ হয়ে আসছিল, নিঃশ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল। এভাবে স্বামীকে মৃত্যুর মুখে দেখে সহ্য করতে পারছিলেন না রেনু। কোনোভাবে স্বামীকে বাঁচাতে চাইছিলেন তিনি। কোনো উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত স্বামীকে মুখ দিয়ে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টা কোনো কাজেই লাগেনি। বাঁচানো যায়নি রবিকে।

আগ্রার একটি হাসপাতালের বাইরে অটোর মধ্যেই রবি সিংঘালের মৃত্যু হয়। রেনুর স্বামী হারানোর দুঃখে যেন তখন বাতাসও ভারী হয়ে উঠেছিল।

রেনু সিংঘাল উত্তরপ্রদেশের আগরার আভাস বিকাশ সেক্টর ৭ এর বাসিন্দা। তার স্বামীর হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তিনি তাকে স্বরোজিনি নাইরু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে (এসএনএমসি) নিয়ে যান।

রেনু একটি অটোতে করে রবিকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। তারা সরকারি ওই হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছানোর পরপরই রবির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রেনু আপ্রাণ চেষ্টা করেন যেন হাসপাতাল পর্যন্ত রবিকে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন দেখলেন রবি কিছুতেই শ্বাস নিতে পারছেন না; তখন তিনি মুখ দিয়ে স্বামীর মুখে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি রবিকে বাঁচাতে পারেননি।

উত্তরপ্রদেশে হাসপাতালে বেডের সঙ্কট, অক্সিজেনের সঙ্কট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ ক্রমাগত বাড়ছেই। অনেক হাসপাতালে জায়গা না থাকায় রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে এই চিত্র শুধু উত্তরপ্রদেশের নয়, বরং এখন পুরো ভারতের পরিস্থিতি একই রকম।

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *