সিলেটে ট্রাক চালককে হত্যা রহস্য উন্মোচিত- আসামী গ্রেফতার

দেশ

ক্ষোভ থেকেই ঘুমন্ত ট্রাকচালককে হত্যা

ক্ষোভ থেকেই ঘুমন্ত ট্রাকচালককে হত্যা

সিলেট: ক্ষোভ থেকেই ট্রাকচালক মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেন হেলপার শুকুর আলী শুভ। গাড়ি মেরামতের যন্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত চালকের মাথায় আঘাতের পর গলা কেটে হত্যা করেন তিনি।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন কান্তি দাসের আদালতে তাকে হাজির করা হলে হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শুভ।

শুভ গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার জাইতর বালা গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে।

মুজিবুর কুমিল্লা জেলার মুরাদপুরের আলীরচক গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে।
আদালতে তার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার দুই মাস আগ থেকে চালক মুজিবুরের সঙ্গে হেলপার হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কাজ শুরু করেন শুভ।
কিন্তু টাকা চাইতে গেলেই তাকে মারধর করতেন চালক। চাকরির পারিশ্রমিক না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই গত ২৩ মার্চ রাত ২টার দিকে ট্রাকে ঘুমন্ত অবস্থায় চালক মুজিবুরকে হত্যা করেন তিনি।

আাদালতকে শুভ জানায়, ঘটনার রাতে সিলেট সদরের ধোপাগুল থেকে পাথরবোঝাই ট্রাক নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা। পথিমধ্যে সিলেটের ওসমানীনগরে রাস্তার পাশে ট্রাক দাঁড় করিয়ে চালক ঘুমাতে যাবার আগে হেলপার শুভকে জেগে থাকতে বলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগায় হেলপার শুভ। ঘুমের মধ্যে গাড়ির চাকা মেরামতের যন্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাতের পর চালক মুজিবুররক গলা কেটে হত্যা করেন। ঘটনার পর মোবাইল, মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান শুভ।

গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) জেলা গোয়েন্দা শাখা ও ওসমানীনগর থানার সমন্বয়ে পুলিশের বিশেষ টিম দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় ওসমানপুর বাজার থেকে শুভকে গ্রেফতার করে।

লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার পরদিন চালকের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে স্বপ্ন মিয়া মরদেহটি তার বড় ভাইয়ের হিসেবে শনাক্ত করেন।

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় চালক হত্যার ঘটনাটি ক্লুলেস ছিল। এরপর পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মীয়া মোহাম্মদ আশীস বিন হাছানের সমন্বয়ে একটি টিম মামলাটির তদন্ত শুরু করে। তদন্তের দায়িত্ব পান সিলেটের ওসমানীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিখিল চন্দ্র। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় হত্যাকাণ্ডের মাত্র এক মাসের মধ্যে আসামিকে গ্রেফতারে সক্ষম হয় পুলিশ।

গত ২৪ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে পাথরবোঝাই ট্রাকে চালকের আসনের পেছনের কেবিন থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২৫ মার্চ নিহতের ভাই স্বপ্ন মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে ওসমানীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। প্রথম অবস্থায় হত্যার ঘটনাটি রহস্যঘেরা থাকলেও তদন্তে প্রমাণ সাপেক্ষে একমাত্র আসামি শুভকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *