সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হিন্দু গ্রামে হেফাজতের হামলার ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। এনিয়ে হামলার ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের করা মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে পুলিশের করা মামলায় দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের সবাইকে অজ্ঞাত হিসেবে দেখানো হয়েছে। বুধবার (১৮ মার্চ) শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৭টি হিন্দুবাড়িতে হামলা চালানো হয়। এসব বাড়ি থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে দিরাইয়ের তাড়ল ইউনিয়নের সদস্য স্বাধীন মিয়াকে।
<মামলার বাদী ইউপি চেয়ারম্যান বিকেকান্দ মজুমদার বকুল বলেন, ‘আমরা এ হামলার ঘটনায় ব্যথিত। তারপরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমরা গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে মামলা করেছি।’ পুলিশের করা মামলার বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক কিছু বলতে রাজি হচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘মামলা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে কারও নাম বা মামলার ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবো না।’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা সদরে শানে রিসালাত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। ওই দিন রাতে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুমন দাস আপনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মামুনুল হককে নিয়ে দেওয়া একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ঝুমন দাসকে পরদিন রাতে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতে প্রতিবাদ মিছিল করে এলাকাবাসী। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) সকাল ৮টার পর থেকে নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৮৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত গ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।