জাতীয় স্বার্থে ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এক-চিন ইস‍্যুতে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক

যেকোনো পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে রয়েছেন ভারতের সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শুক্রবার সন্ধ্যায় চীন-ভারত সীমান্ত সমস্যা এবং আগামীর করণীয় ঠিক করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ‘সর্বদলীয়’ বৈঠকে মিলিত হন।

ভারতের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরস্পরের মধ্যে তীব্র বিরোধ থাকলেও জাতীয় স্বার্থে সবগুলো রাজনৈতিক দল এদিন এক সুরে চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মোদির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি করেছেন । শুধু তাই নয়, চীনের এই আক্রমণকে আগ্রাসন হিসেবেও মনে করছেন ভারতের সব রাজনৈতিক দল গুলো।
যদিও বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিব্রত হয়েছে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর প্রশ্নবাণে। সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী কে প্রশ্ন করে বলেন, চীন সীমান্তে এত বড় সৈন্য সমাবেশ করে ফেললো সেটি বিজেপি সরকার কেন খবর পাইনি। তিনি এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট করে উপগ্রহ চিত্রের উদাহরণ টেনে বলেন, সরকার কী উপগ্রহ চিত্রের দিকে নজর রাখে না। সোনিয়া গান্ধী একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন গোটা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত নেতা-নেত্রীদের কে সরকারের পক্ষ থেকে অবহিত করতে হবে।

ওদিকে করোনা ইস্যুতে মোদীর দুদিনের বৈঠকে জায়গা না পেলেও শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকে ডাকা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নজিরবিহীন হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি করেন। মমতা ওই বৈঠকে বলেন, চীনের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে আমাদের সবাইকে এক হতে হবে।
তৃণমূল নেত্রী আরো বলেন, চীনে গণতন্ত্র নেই সেখানে একনায়কতন্ত্র চলে তারা যা খুশি করতে পারে কিন্তু আমাদেরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যদিও ওই বৈঠকে বামেদের দিক থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কিছুটা কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। সিপিআই নেতা রাজা বিজেপি সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন চীনের সঙ্গে সংঘাতে যেতে গিয়ে আমেরিকার জোটে যাতে যোগ না দেয় ভারত।

বৈঠকে কংগ্রেসের শরিক দলের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন দেশটির স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরাও। গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখে গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বরাবর চীন-ভারত সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ ভারতের ২০ জন সেনা সদস্য প্রাণ হারান। এরপর থেকেই সীমান্তে চরম উত্তেজনা শুরু হয়। চীন বিরোধিতায় গোটা ভারতের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছেন।
চীনের পণ্য বর্জন ছাড়াও বাণিজ্যিক সম্পর্কও ভারত ছিন্ন করতে পারে। ইতিমধ্যেই চীন থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানী চুক্তি বাতিল করেছে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়। এছাড়াও ভারতের রাষ্ট্রীয় টেলিফোন সংস্থা বিএসএনএলও বেশ কিছু চুক্তি বাতিল করেছে বলে ভারতের গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে।

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *