কচু চাষে ভাগ‍্য পরিবর্তনের স্বপ্ন

সিলেট

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে অভাবের সংসারে ভাগ্য ফেরাতে প্রথমবারের মত ৯ বিগা জায়গা জুরে লতিরাজ কচু চাষ করে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখছে এক কৃষক।

কৃষকের নাম শাকিরুজামান (৩৭)। সে দিরাই পৌরসদরের মজলিশপুর গ্রামের ভাড়াটিয়া বাসায় থাকে। সে মারকুলী গ্রামের মৃত তবারক আলীর ছেলে।

সম্প্রতি পৌরশহরের মজলিশপুর গ্রামের আমন জমিতে গিয়ে দেখা যায় বিশাল জায়গা জুড়ে কচু চাষ করা হয়েছে। উড়া বেঁধে থাকছে এক যুবক আর সেখানে কচু জমি থেকে লতা তুলে বাজারজাত করার জন্য পরিষ্কার করছেন দুই জন কৃষক।

কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে থাকেন তিনি ভাড়াটিয়া বাসায়। ১০ বিগা আমন জমি রংজমা নিয়ে তিনি প্রথমবারের মত শুরু করেছেন কচু চাষ।

শাকিরুজামান     বলেন, ১০ বিগার আমন জমি ৩৩ হাজার টাকা বছর করে ৩ বছরের জন্য রংজমা নিয়েছি। ৯ বিগার জায়গা জুড়ে লতিরাজ কচু চাষ করেছি। আর ১ বিগার জায়গাতে শসা চাষ করেছি।

তিনি বলেন, আমি এখন সপ্তাহে ১০ মনের মত কচুর লতা বিক্রয় করতে পারি প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। আর আশা করছি রমজানের শেষে প্রতি সপ্তাহে ৫০ মন কচুর লতা সংগ্রহ করতে পারব। এখন স্থায়ী ভাবে একজন মানুষ রেখেছি পরে হয়ত আর বাড়াতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কচু চাষ করতে খুব তেমন বেশি মজুরি খরচ হয় না। কচুর চারা রোপনের ২০ দিন পরপর ৬ মাস পর্যন্ত হালকা নিড়ানি দিতে হয়। কচু গাছের ৩ মাস বয়স হয়েছে আর তাতেই গাছের গুড়ায় যে লতি বের হয়েছে তা কেজি প্রতি খুচরা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। ১ কিয়ার জমিতে কচু চাষে মজুরি খরচ ও যাতায়েত খরচসহ মোট উৎপাদন খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, কচু গাছের ছয় মাস বয়স সম্পূর্ণ হলে তা বাজারজাত করার উপযোগী হয়। ১ কিয়ার জমিতে কচু গাছ হয় প্রায় ১০ হাজার, যার প্রতিটি কচুর পাইকারি মূল্য ১৫ থেকে ২০ টাকা।

তিনি কি করে এই পেশায় এসেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি চার বছর ধরে সবজি চাষ করে আসছি তবে কচু চাষ এই প্রথম। আমি ইন্টারনেটে দেখে কচু চাষ করতে আগ্রহী হই। আর এ নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে।তারা আমাকে সহযোগীতা করে। তাদের মাধ্যমে আমি কুমিল্লা থেকে ২ টাকা পিছ ২ হাজার চারা সংগ্রহ করি। এতে গাড়ী ভাড়া বাবদ আমার ৫০০০ হাজার টাকা খরচ হয়।

এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ শাহীন আলম বলেন, আমাদের মাধ্যমে শাকিরুজামান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কুমিল্লা শাখা হতে লতিরাজ কচুর চারা সংগ্রহ করেন। আর তিনিই দিরাইয়ের মধ্যে প্রথমবারের মত ৯ কিয়ার জায়গা জুরে কচু চাষ করেছেন। আর কচু চাষে লাভ বেশি। দিরাই উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নে সবজি চাষ করার মত প্রচুর জায়গা থাকলেও এখানকার কৃষকরা শুধু ধান চাষ করার প্রতি আগ্রহী বেশি তাই আমরা কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে আগ্রহী করতে কাজ করে যাচ্ছি। শাকিরুজামানের কচু চাষ দেখে হয়ত অনেকে এতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। আমাদের সাথে অবশ্য দুই, একজন যোগাযোগ করেছে তারা কচু চাষ করতে আগ্রহী।

Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *