ঈদের ছুটির পর আগামী ১৭ মে থেকে আবারও ৭ দিনের লকডাউন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে জনসাধারণকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন -২০১৮ এর সংশোধনী এনে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৩ মে) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এমনিতেই ঈদের ৮/১০দিন পর ছাড়া মানুষজন রাজধানীতে আসে না। তাই আপাতত ঈদের পর চলমান বিধিনিষেধ মেনে চলার মেয়াদ আরও সাতদিন বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে মাস্ক পরাটা নিশ্চিত করতে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন -২০১৮ এর ক্ষমতাবলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিধান রয়েছে, তবে সেক্ষেত্রে জনবলের স্বল্পতা রয়েছে, একটি এলাকায় সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও কুলানো যাবে না। তাই জনসাধারণকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। সেটি চূড়ান্ত করতে এরই মধ্যে আইনের সংশোধনী এনে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশবলে তা কার্যকর করা হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, মানুষ যেভাবে বাড়ি গেছে, যেভাবে মার্কেট করেছে তাতে সংক্রমণ বাড়বে এ নিয়ে সন্দেহের কোনও কারণ নাই। তাই আবশ্যিকভাবে শতভাগ জনগোষ্ঠীকে মাস্ক পরানোর বিকল্প নাই। এটি বাস্তবায়নের জন্যই পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কিছুটা নিম্নগামী হলেও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছে সরকার। এ কারণেই চলমান ‘লকডাউন’ ঈদের পরেও অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেভাবে স্বাস্থ্যবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করে মানুষজন রাজধানী ছেড়েছে, তারা আবারও ঈদের পর একইভাবে রাজধানীতে ফিরবে। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ রতে পারে। তাই ঈদের পরে একই শর্তে আরও ১০ দিনের জন্য চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন। যারা রাজধানী ছেড়ে গ্রামে গেছেন, এতে যদি তাদের অর্ধেক পরিমাণ মানুষও আটকে রাখা যায় তাহলে কিছুটা হলেও সুবিধা পাওয়া যাবে।
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন পালন হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। কয়েক ধাপে বাড়িয়ে চলমান সেই লকডাউনের মেয়াদ ১৬ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বলবত রয়েছে। এ সময় আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন :